Monday, February 28, 2011

বিলগ্নীর রথে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের সর্বনাশ

বিলগ্নীর রথে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের সর্বনাশ

নয়া উদারনীতির অন্যতম উপাদানই হলো বিরাষ্ট্রীয়করণ। নরসিমা রাওয়ের আমল থেকে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়া গতি পায় এন ডি এ আমলে। বামপন্থীদের বাধায় প্রথম ইউ পি এ আমলে তা শ্লথ হয়ে গেলেও ততক্ষণে অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল। ২০০৬-২০০৭ আর্থিক বছরে এসে দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় সরকার ২৪৪টি কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার মধ্যে ২৭টি সংস্থা বন্ধ ও বিক্রি করে মোট রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সংখ‌্যা ২১৭-তে নামিয়ে এনেছে। এই ২৭টি সংস্থা হয় বন্ধ হয়ে গেছে অথবা বিক্রি করা হয়েছে বেসরকারী মালিকের কাছে। আবার এই ২৭টির মধ্যে ২০টি সংস্থাই পশ্চিমবাংলায় অবস্থিত। এগুলি হলো : ভারত ব্রেকস অ্যান্ড ভালবস্‌, টায়ার কর্পোরেশন (ট্যাংরা ইউনিট), স্মিথ স্ট‌্যানস্ট্রিট, ফার্টিলাইজার প্রোমোশন, রিসার্চ ও মার্কেটিং ডিভিসন, এম এ এম সি, সাইকেল কর্পোরেশন, বার্ন স্ট্যান্ডার্ড রিফ্র্যাকটরিস, বি ও জি এল, দুর্গাপুর ফার্টিলাইজার, আর আই সি, জেসপ (দুর্গাপুর ইউনিট), হলদিয়া ফার্টিলাইজার, রেরোল বার্ন, বেঙ্গল ইমিউনিটি, ভারত প্রসেস অ্যান্ড মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড, এন জে এম সি মিলস্‌, এন টি সি‍‌ মিলস্‌।

অথচ এই কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি ১৯৭৪-৭৫ সাল থেকে ২০০৬-২০০৭ সাল পর্যন্তই ৩২ বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের কোষাগারে ১০,৬৮,৪১৩ কোটি টাকা জমা দিয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ তৈরি করেছে ৭,৪৪,৬৭৪ কোটি টাকার। বিলগ্নীর রথে ১৯৯১-৯২ সাল থেকে ২০০৮সালে ৫৩,৪২৩ কোটি টাকার শেয়ার কেন্দ্রীয় সরকার বেসরকারী দেশী-বিদেশী সংস্থার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। 

কেন্দ্রীয় সরকার ২০১০-১১ আর্থিক বছরে প্রথমে ঠিক করেছিল ৪৪,০০০ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করবে। তা বাড়িয়ে ৫৫,০০০ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল। এবারের বাজেটে জানা যাবে কত বিক্রি হয়েছে। তবে ৬০হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হতে চলেছে। 

এখন মহারত্ন, নবরত্ন, মিনিরত্নের মতো কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির শেয়ারও বাজারে বিক্রি করতে উদ্যত হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু বিক্রি হয়েছে। আরও হবে। ন্যাশনাল হাইড্রো ইলেকট্রিক কর্পোরেশন, ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন, কোল ইন্ডিয়া, ন্যাশনাল মিনারেল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন, ইঞ্জিনিয়ারস ইন্ডিয়া লিমিটেড, সাটলেজ জলবিদ্যুৎ নিগম-এর শেয়ার বাজারে বিক্রি করা হয়ে গেছে। 

একই সঙ্গে সরকার নিজেই ঢালাও কর্মী সঙ্কোচন করছে। কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিতে ২২লক্ষ ৫০হাজার শ্রমিক-কর্মচারী-অফিসার-ইঞ্জিনিয়ার কাজ করতেন। আজ তা কমতে কমতে ১৫ লক্ষে এসে দাঁড়িয়েছে। আগামী কয়েক বছরে তা আরও ২লক্ষ কমে যাবে। স্যাম পিত্রোদা কমিটির রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়েছে—অবিলম্বে বি এস এন এল-এর ১ লক্ষ শ্রমিককে কমাতে হবে। 

সঙ্গতি কমেছে বিপুল, চমকের রাজনীতিতে নতুন প্রকল্পের সঙ্গেই বিপদে যাত্রীসুরক্ষা

নিজস্ব প্রতিনিধি

নয়াদিল্লি, ২৭শে ফেব্রুয়ারি – লালুপ্রসাদ যাদব যখন রেলমন্ত্রকের পাট গুটিয়েছিলেন সে সময় বিনিয়োগের জন্য উদ্বৃত্ত ছিল ৯০হাজার কোটি টাকা। মমতা ব্যানার্জির সময়ে তা নেমে এসেছে ৪হাজার ১০৫কোটি টাকায়। সেই ছবি সামনে আসতেই, সন্দেহ প্রায় বিশ্বাসে পরিণত হয়েছে – লাগামছাড়া ধোঁকাবাজি করা হয়েছে রেল বাজেটে।

এই বাজেটে যেভাবে ফাঁকা তহবিল নিয়ে নির্ভয়ে একের পর এক কারখানার ঘোষণা করেছেন তার নজির অমিল। শিল্প এবং কর্মসংস্থানের পক্ষে নেতিবাচক ভাবমূর্তি নিয়ে রেলমন্ত্রী যে ভোটের আগে যথেষ্ট চিন্তিত, রেল বাজেট জুড়েই তার প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু, রেলমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি রাজ্যে ১৬টি নতুন কারখানা 'ফটাফট' করার প্রচার চালাচ্ছেন তা যে স্রেফ ফাঁকা আওয়াজ সেই প্রমাণ রয়ে গেল নিজের বাজেটেই। যোজনা বরাদ্দ খাতে রেলবাজেটে বরাদ্দ হয়েছে ৫৭হাজার ৬৩০কোটি টাকা। গতবার বরাদ্দ ছিল ৪০হাজার কোটির কিছু বেশি। বরাদ্দ তো বাড়লো। টাকা আসবে কোথা থেকে?

মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ২০হাজার কোটি টাকা আসবে সাধারণ বাজেট থেকে। বাজার থেকে ২০হাজার কোটি টাকা জোগাড় করবে রেল। গতবার যা জোগাড় হয়েছিল, এবার লক্ষ্যমাত্রা তার দ্বিগুণ। ফলে, অনিশ্চয়তা থাকছেই। আর রেলের নিজস্ব উৎস থেকে আসবে ১৪হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। এ বাবদ লক্ষ্যমাত্রা কিন্তু গতবারের চেয়ে ৩শো কোটি টাকা কমিয়ে দিয়েছেন রেলমন্ত্রী। কিন্তু, তা-ও কি জোগাড় হবে? ঘুরপথে বেসরকারীকরণের 'পি পি পি' মডেলও করে দেখাতে পারেননি রেলমন্ত্রী।

রেলের মোট ব্যয় করার পর মোট আয় থেকে প্রায় ৯পয়সা হাতে থাকবে বলে দাবি বাজেটে। আয়ের প্রধান উৎস যাত্রীভাড়া এবং মাসুল। এবার কিন্তু মাসুল বাবদ আয় বাড়েনি। বরং, পণ্য পরিবহন কমেছে ২কোটি টন। এদিকে, 'ভিশন ২০২০' অনুযায়ী পণ্য পরিবহনের যে লক্ষ্য হওয়া উচিত তার ৬০শতাংশ কম লক্ষ্য নিয়েছেন রেলমন্ত্রী। রেল লাইন থেকে ওয়াগন – প্রয়োজনের তুলনায় কম। রেলমন্ত্রীই জানিয়েছেন, ব্যয়ের অন্যতম কারণ ডিজেলের দামবৃদ্ধি। তা আরো বাড়বে। ফলে, হাতে সত্যিই ক'পয়সা থাকবে, সেক্ষেত্রে বিনিয়োগের কি হবে?

নতুন প্রকল্পের ভাঁওতা কত বড়, তা আরো বোঝা গিয়েছে আগের ঘোষণা চেপে যাওয়ার প্রবণতায়। কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে চালু প্রকল্পের কি হবে। নতুন লাইন বা সিগন্যালিং ব্যবস্থার কি হবে? প্রধানমন্ত্রী বিকাশ যোজনার নামে বেশ কিছু প্রকল্প সেখানে বস্তাবন্দী করা হচ্ছে। কিন্তু, রেল সুরক্ষা বাবদ বরাদ্দ কত? তারই বা কি হবে। সংঘর্ষ-প্রতিরোধী ব্যবস্থা চালু করার প্রতিশ্রুতি পুরানো, কাজ হয়নি কিছু। বেড়েছে দুর্ঘটনা। যাত্রীসুরক্ষায় সুস্পষ্ট বরাদ্দের কথা নেই কেন বাজেটে? আরো বিপজ্জনক, চালু সম্পদ ব্যবহারযোগ্য রাখার জন্য যে তহবিল কাজে লাগে, সেই অবচয় তহবিল ৭হাজার ৬শো কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৫হাজার ৭শো কোটিতে নামিয়ে আনা। ব্যয়ের তুলনায় আয় বাড়িয়ে দেখাতে যা করা হয়েছে। 

দায়-দায়িত্ব এড়িয়ে ভোটের বাজেট পেশ করেছেন মমতা ব্যানার্জি। বাজেটের দিনই বিকেলে আবির খেলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ভোটে জিততে মানুষের সঙ্গে কারচুপিই যে তৃণমূলের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার, ফের বেরিয়ে পড়েছে তা-ও।

কোথায় রেলের বিদ্যুৎকেন্দ্র? মনপুরার জঙ্গলে গাছ কেটে বেপরোয়া লুঠ তৃণমূলীদের

ভাস্কর দাশগুপ্ত : পুরুলিয়া, ২৭শে ফেব্রুয়ারি — চমকে ধমকে গিমিকের রেল বাজেট। আজকের প্রতিশ্রুতিতে চাপা পড়ে গেল অতীতের প্রতিশ্রুতি। ফুলে ঢাকা মঞ্চে হয়েছিলো মৌ চুক্তি। চার মাস পেরলো। সেই তিমিরেই রয়ে গেছে রেল প্রস্তাবিত আদ্রার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। ৪৩০ হেক্টর জমির কয়েক লক্ষ গাছ কেটে নাকি ১৬২০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে। তার একটি ইটও গাঁথা হয়নি। কিন্তু রাতের অন্ধকারে মনপুরার জঙ্গল থেকে নির্বিচারে চলছে গাছ চুরি। সবুজ ধ্বংসের ভয়ঙ্কর ঘটনা। এসব মানুষ ভুলে যাবেন নতুন প্রতিশ্রুতির বন্যায়? এলাকায় মানুষ খোলাখুলি বলছেন, এই গাছ চুরি কাণ্ডে রেলের একশ্রেণীর কর্মী এবং বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা জড়িত। সাফ হয়ে যাচ্ছে মনপুরার জঙ্গল। বেঁচে আছে মাত্র কয়েক হাজার গাছ। কিন্তু বি‍‌বেকহীন, সামাজিক দায়িত্বহীন তৃণমূলীরা বুঝবে না এসব। যেভাবে বৃক্ষ নিধন চলছে, তাতে সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যাবে মনপুরার জঙ্গল।...

>>>

সত্যেন সরদার
কোটশিলা ও রঘুনাথপুর (পুরুলিয়া), ২৭শে ফেব্রুয়ারি— তৃণমূলের নেতৃত্বে মাওবাদী ঘাতক বাহিনীসহ বামফ্রন্টবিরোধী সমস্ত শক্তি গরিব মানুষের ঐক্যে ভাঙন ধরানোর চক্রান্তে শামিল হয়েছে। এরাজ্যে বামফ্রন্টকে দুর্বল করার জন্যই গরিব মানুষের ঐক্যে ভাঙন ধরানোর এই চেষ্টা হচ্ছে। এই অবস্থায় গরিব মানুষের ঐক্যকে আরো সুদৃঢ় করে বামফ্রন্টবিরোধী শক্তিগুলির এই চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান ও সি পি আই (এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক বিমান বসু। ....

>>>

নিজস্ব প্রতিনিধি
কলকাতা, ২৭শে ফেব্রুয়ারি — লালগড়ে রেলের একটি কারখানার ঘোষণা ছিল মমতা ব্যানার্জির। ২০১০-র ৯ই আগস্ট লালগড়ের সভায় তেমনই আশার বাণী শুনিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাজেটে তার ঘোষণা নেই। লালগড়ে একটি রেল স্টেশনের কথা ছিল। মমতা ব্যানার্জির এই ঘোষণাটি ছিল ২০০৯-র রেল বাজেটে। এবারের ঘোষণায় সেটি বিলকুল উধাও। ''লালগড়ে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল — কী লাগবে বলুন ? সব করে দেব। '' এমনই বলেছিলেন রেলমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি — ঐ ৯ই আগস্টের সভাতেই। সে'সবও কিছুই হয়নি।...

>>>

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর, ২৭শে ফেব্রুয়ারি — নেতাইয়ে মাওবাদী-তৃণমূলী ষড়যন্ত্র এবং সি পি আই (এম)-র বিরুদ্ধে কুৎসার প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ ফের লালপতাকা হাতেই মিছিল করলো জঙ্গলমহলে। মিছিলের স্লোগানে যখন ধরমপুর কাঁপছে, রামগড় যখন উত্তাল হচ্ছে ঠিক তখনই রবিবার সকালে তৃণমূলের ঘেরাটোপেই নেতাইয়ের পুকুর থেকে জল তুলে অস্ত্র খোঁজার অভিযান চালাচ্ছিলো সি বি আই। মিছিল যখন শেষ হলো পুকুরের জল তোলার কাজও তখন শেষ হলো। মিললো না অস্ত্র, কাদা মাটি, পাথর, নুড়ির টুকরোর সঙ্গে মিললো বেশ কয়েকটি কার্তুজের খোল।...

>>>

নিজস্ব প্রতিনিধি
কলকাতা ও ভুবনেশ্বর, ২৭শে ফেব্রুয়ারি — বাজেট পেশ হয়েছে। আলোচনা এখনও শুরু হয়নি। তারমধ্যেই প্রহরীবিহীন লেভেল ক্রসিংয়ে বেলাইন নীলাচল। একটি রোড রোলারকে সরাসরি ধাক্কা মারার পর একটি-দু'টি নয়, ১১টি বগি নিয়ে বেলাইন পুরী থেকে নয়াদিল্লিগামী নীলাচল এক্সপ্রেস। বড়জোর রক্ষা পেলেন ১২৮৭৫নীলাচলের স্লিপার ক্লাস-এইট, দ্বিতীয় শ্রেণীর অসংরক্ষিত সাধারণের মতো এগারোটি বগির যাত্রীরা। যদিও, এঘটনায় রোড রোলারের চালক গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন। ভদ্রক স্টেশন ম্যানেজার আর এন বিশ্বাস সংবাদ সংস্থা পি টি আই-কে জানিয়েছেন, রোলারের চালককে ভদ্রকের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।...

>>>

No comments: